নাম সংকীর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারনা করে চলছে কীর্তনীয়া দল
বিশেষ প্রতিনিধি-
নাম সংকীর্তন করার নামে প্রতারনা করে চলছে কীর্তনীয়া দল গুলো। নাম কীর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশী দাম পেলে অন্য পেন্ডলে সংকীর্তন করার উদ্দেশে নিয়মিত প্রতারনা করে চলছে। অথচ বৈষ্ণবগণের মতে কলিযুগে শ্রেষ্ঠ ধর্মই হচ্ছে ‘নাম সংকীর্তন’। আজকাল বহুস্থানেই নাম সংকীর্তন হচ্ছে এবং হতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও অষ্টপ্রহর ষোলপ্রহর,চব্বিশপ্রহর, চৌষষ্ঠটি প্রহর প্রভৃতি সময় ধরে নাম সংকীর্তন করা হয়ে থাকে।
আমরা এই সমস্ত নাম সংকীর্তনে দেখি বিভিন্ন রাগ-রাগিনী, তাল ও ছন্দে করা হয়ে থাকে। ইহার মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন সুরের ব্যঞ্জনায় মনকে ভগবানের পাদপদ্মে নিবিষ্টকরা। শ্রীচৈতন্য ও নিত্যানন্দ প্রভু এই নাম সংকীর্তনের মাধ্যমে ভজনার পথ সুগম করেছিলেন। তাঁরাই এই নামের মাধ্যমে ভক্তি জগতে এক নব ভাবগঙ্গা এনেছিলেন। কলিকালে নাম সংকীর্তনের জনক এই দুইজনকেই বলা হয়।
কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ ফেনী জেলা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এক শ্রেণির ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ী যাদের ওপর নির্ভর করে মহোৎসবের আয়োজন করা হয়,যারা দলের টাকা বায়না নিয়ে বেশি দাম পেলে আবার অন্যত্র থেকেও বায়না নিয়ে পূর্বের বায়নাকৃত পেন্ডেলকে বঞ্চিত করে চলছে। এতে ঐ উৎসব কমিটি বিব্রত ও অনুষ্ঠান আয়োজনে বিচ্ছুতি ঘটে। ফলে একটি সুন্দর আয়োজন বিনষ্ট হয়ে যায়।
এজাতীয় কীর্ত্তনীয়া দল ও দলের ম্যানাজার কে সকলে মিলে বর্জন করুন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলে মনে করেন আয়োজন কমিটি। নতুবা এরকম প্রতারক চক্র ভবিষ্যতে এমন কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকবে। তাদের দাবী সামনের দিনগুলোতে কীর্ত্তনীয়া দল বায়না করতে অবশ্যই যাকে বায়না দিচ্চেন তার আইডি কার্ড সংগ্রহ করবেন।
যাঁরা প্রকৃত ভক্ত তাঁরা অর্থের কামনা করেন না। কারণ, কামনা করা এক প্রকারের স্বার্থপরতা। তাঁদের মতে ভগবানই একমাত্র কাম্য বস্তু। তাঁরা ভগবান ব্যতীত আর কিছুই চান না। এই ভগবানকে লাভ করতে হলে চাই আপন চিত্ত শুদ্ধি। কিন্তু সে নাম বিলাবেন টাকার বিনিময়ে, তাও আবার প্রতারনা করবেন সেটি কেমন নাম বিতরন তা প্রশ্ন থেকে যায় ভক্ত হুদয়ে।
সবার আগে প্রয়োজন ভগবান ভজনে চিত্তশুদ্ধি হয়ে থাকা। চিত্তশুদ্ধি ব্যতীত কখনও ভগবৎ দর্শন হয় না। নাম সংকীর্তনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে আপন চিত্তশুদ্ধি। ভগবানের নাম চিন্তা করা, তাঁর নাম গুণগান করা, ইহাই নাম সংকীর্তনের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। এক কথায় ভগবৎ সেবাই হলো নাম সংকীর্তনের চরম ও পরম লক্ষ্য। অতি আনন্দিত হয়ে মহাপ্রভু রায় রামানন্দ ও স্বরূপ দামোদরকে বললেন “কলিযুগে শ্রীশ্রী নামসংকীর্তনই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ সাধন। কলিতে এই নাম সংকীর্তনের মতো এত সহজ পথ আর নেই। সময় এসেছে প্রতারকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার তা না হতে ভুক্তভোগী হতে হবে আয়োজককারীদের।