বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝুলন উৎসব বা ঝুলন যাত্রা

বিশেষ প্রতিনিধি
বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব এই ঝুলন উৎসব বা ঝুলন যাত্রা। তাই ঝুলন পূর্ণিমাকে শ্রাবণী পূর্ণিমাও বলা হয় । রাখি পূর্ণিমার মাধ্যমে ঝুলন যাত্রার সমাপ্তি ঘটে। শ্রাবণী পূর্ণিমাকে একাধারে ঝুলন পূর্ণিমা বলে।
উপলক্ষে ফেনীতে অনুষ্ঠিতব্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম শ্রী শ্রী জগন্নাথ বাড়ি মন্দির। প্রতি বছর ঝুলন উৎসব উপলক্ষে শ্রীমদ্ভাগত পাঠের আয়োজন থাকে এবং পাঁচদিন ব্যপি এ আয়োজনে ভক্তবৃন্দের জন্য মহা প্রসাদের ব্যবস্থা থাকে। এছাড়াও অনেক মন্দিরে ঝুলন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
সাধারণত শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি (পবিত্ররোপণ একাদশী) থেকে পূর্ণিমা তিথি,এই পাঁচদিন ব্যপি অনুষ্ঠিত হয় এ ঝুলন উৎসব।
‘ঝুলন’ শব্দটি এসেছে ‘দোলনা’ শব্দটি থেকে। ভগবান অবতার রূপে আবির্ভূত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকলাপ করে থাকেন, যাকে এককথায় ‘যাত্রা’ বা ‘লীলা’ বলে। ভগবানের প্রতিটি লীলা বা যাত্রা শিক্ষামূলক, যা তিনি রচনা করেন আমাদেরকে শিক্ষা দেবার জন্য। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, বয়ঃসন্ধিতে কিশাের কৃষ্ণ ও রাধারানীর যে মাধুর্যপূর্ণ প্রেমের পরিপূর্ণ প্রকাশ বৃন্দাবনে স্থাপিত হয়েছিল, সেই প্রেমলীলার স্বরূপাই হল ঝুলনযাত্রা
ভগবানকে তাঁর সৃষ্টি ও সেই সৃষ্টিকে রক্ষার জন্য অবতারত্ব গ্রহণ করেন। অবতার রূপে তাঁর নানারূপ কার্যকলাপকে এককথায় ‘যাত্রা’ বা ‘লীলা’ বলে। ঝুলনযাত্রা তেমনি ভগবানের প্রেম মাধুর্যময় একটি লীলা, যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সহিত শ্রীরাধার মাধুর্যপূর্ণ প্রেমের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে।
রাধাকৃষ্ণ বৃন্দাবনের কুঞ্জবনে বিশুদ্ধ প্রেমের আদানপ্রদানের মাধ্যমে এই জীবজগতে প্রথম প্রেমের প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন ।
শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীরাধিকা তাঁদের অষ্টসখী ললিতা, বিশাখা, চিত্রা, ইন্দুরেখা, চম্পকলতা, রঙ্গদেবী, তুঙ্গবিদ্যা ও সুদেবী সহ গোপিনীদের সাথে এই লীলা করেছিলেন।
ঝুলন উৎসবে শুধুমাত্র রাধা, কৃষ্ণ আর গোপীরা থাকে, যেখানে নন্দ মহারাজ, মাতা যশোদা, অন্যান্য বন্ধু, ভৃত্য ও সহচরদেরকে অনুমতি দেওয়া হয় না। গোপীদের প্রেম আধ্যাত্মিকভাবে প্রেমের সর্বোচ্চ স্তরে স্থিত যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। গোপীরা কীভাবে কৃষ্ণের সাথে সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিকভাবে সংযুক্ত তা সাধারণ মানুষের কল্পনার বাইরে!